Dhaka 1:23 pm, Thursday, 30 November 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, করুণ ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী, পর্ব – ০১

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:34:29 pm, Thursday, 11 July 2019
  • 206 Time View

ফাহমিদা আফরিন সিথি: ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকে জাতি হিসেবে আমরা বরাবরই বেশ সমৃদ্ধ ও গর্বিত। আমাদের দেশের প্রতি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে নানা পুরাকীর্তি ও লোকগাথা। শত শত জানা-অজানা ইতিহাস আজও স্থান করে আছে আমাদের এই ভূখন্ডে। ইতিহাস পাঠ এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘুরে দেখার একটা আগ্রহ ছোট থেকেই মনে কাজ করতো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে পরিবার থেকে যে স্বাধীনতাটুকু পেয়েছি, তা কাজে লাগিয়ে ছোটবেলার সেই আগ্রহকে বাস্তবে রূপ দেয়ার এবং সকলকে তা জানানোর ক্ষুদ্র প্রয়াসেই আজকের এ লিখা।

আমার জন্মস্থান, ছেলেবেলা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবকিছুই ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলায়। সাভার উপজেলা দেশের স্বল্পকিছু স্বনামধন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে একটি কেননা এখানেই রয়েছে মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ইতিহাস জানার এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘুরে দেখার ক্ষেত্রে তাই প্রথমে আমার নিজ উপজেলা সাভারকেই বেছে নিলাম। গুগলে খুঁজে খুঁজে সাভার উপজেলায় অবস্থিত সকল জমিদার বাড়ির একটা তালিকা বের করলাম এবং ভ্রমণ সুযোগের অপেক্ষায় দিন কাটতে লাগলো।

অবশেষে গত ০৮ জুলাই, ২০১৯ (সোমবার) কাঙ্ক্ষিত সুযোগ আসলো। লক্ষ্য সাভার উপজেলার শতাব্দী প্রাচীন রাজবাড়ি, “আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি”। ভ্রমণ সঙ্গী বন্ধু ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল এবং সারোয়ার হোসেন। অনেক ঘাটাঘাটি করেও গুগল ম্যাপে সঠিক লোকেশন বের করতে পারলাম না। তবুও জায়গাটির অবস্থান সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা পাওয়া গেলো। সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিক্সা/ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সায় করে ভাটপাড়া-আড়াপাড়া এলাকায় গেলেই খোঁজ মিলবে জমিদার বাড়ির। ইতোমধ্যে ইন্টারনেট থেকে কিছু রিভিউ পড়ে নিয়েছি জায়গাটি সম্পর্কে।

বেলা বারোটা নাগাদ আমরা ক্যাম্পাস থেকে রওনা হলাম। বাসে করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৌঁছে গেলাম সাভার বাসস্ট্যান্ডে। বাসস্ট্যান্ডে নেমে ওভারব্রিজ দিয়ে পার হয়ে দক্ষিণ দিকে আসলাম। একটি মিষ্টির দোকানে আড়াপাড়া জমিদার বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতেই উনি বললেন সামনে অটো আছে, ওগুলো আড়াপাড়া যায়। যথারীতি আমরা তিনজন একটু সামনে এগিয়ে আড়াপাড়ার কথা বলে একটি অটোতে উঠলাম। এখানে রাস্তা কিছুটা ভাঙা এবং সরু হওয়ায় এবং যানবাহনের সংখ্যা অত্যধিক থাকায় বেশ কিছুক্ষণ আমাদেরকে অটো-রিক্সার লম্বা জ্যামে শব্দ দূষণের মধ্যে কাটাতে হয়। রাস্তার সংকীর্ণতা, অটোর হর্ণ, রিক্সার বেলের শব্দ আর প্রাইভেট কারের হর্ণের সম্মিলনে এক মহা কোলাহল পূর্ণ দূষিত পরিবেশ। প্রায় দশ-পনেরো মিনিট এই অচলাবস্থায় কাটানোর পর মুক্তি মিললো। আমরা এগিয়ে চললাম আমাদের গন্তব্যের দিকে। প্রায় পনেরো মিনিট পর অটো ড্রাইভার আমাদেরকে নামিয়ে দিলেন বাড্ডা-ভাটপাড়া রোডে এবং জমিদার বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিলেন। জনপ্রতি ভাড়া ১০/- করে মিটিয়ে দিয়ে আমরা আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁটতে আরম্ভ করলাম।

এদিক-সেদিক কিছুক্ষণ বিক্ষিপ্তভাবে ভ্রমণের পর রাস্তায় বেশ কিছু লোকের সাহায্য নিয়ে অবশেষে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দেখা পেলাম। ইতোমধ্যে হাঁটতে হাঁটতে আমরা বেশ বুঝতে পারলাম এলাকাটিতে আধুনিকতার ছাপ তেমন পড়েনি, বরঞ্চ সাভারের অন্যান্য প্রায় সব এলাকার চেয়েই এলাকাটি পিছিয়ে রয়েছে। জায়গাটি হিন্দু অধ্যুষিত।

জমিদার বাড়ির শুরুতেই আমরা দেখতে পেলাম জমিদার প্রতিষ্ঠিত, ইতিহাস গুপ্ত রাখা রাধা গোবিন্দ বিদেহ মন্দির। তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে বড় একটি পুকুর। পুকুরটির নাম সবুজ পানা  পুকুর। এটি এখনও এখানকার লোকেরা যাবতীয় দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে। মন্দিরে প্রবেশ দরজাটি কাঠের তৈরী এবং দুপাশে দু’টি করে জানালা রয়েছে। মন্দিরের ভেতরে ঢুঁ মেরে বুঝতে পারলাম মন্দি নতুন কিছু ঘর তৈরী করে এখানেও লোকজন থাকতে আরম্ভ করেছে এবং কয়েকজন মহিলাকে ঘুরঘুর করতে দেখলাম। তাই আমার দুই বন্ধুকে মূল দরজার কাছে রেখে আমি ভেতরে থাকা একজন নারীর অনুমতি চাইতে গেলাম মন্দিরটা ঘুরে দেখার জন্য। অনুমতি মিললো। মূল দরজা পেরুতেই একটু খালি জায়গা  এবং এর পরে মন্দিরের মূল ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। এখানে এখনও নিয়মিত পূজা অর্চনা করা হয়। মন্দিরের ডান দিকে আছে তুলসি মঞ্চ। পাঁচটি সিঁড়ি ও ছয়টি স্তম্ভ দ্বারা নির্মিত এ মন্দিরটির অভ্যন্তরে রয়েছে রাধা ও গোবিন্দের (কৃষ্ণ) মূর্তি। আমরা চটজলদি মন্দিরের এবং আশপাশের বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম।

আড়াপাড়া
রাধা-গোবিন্দ বিদেহ মন্দির, যার দেখা মিলবে জমিদার বাড়ি প্রবেশের শুরুতেই

রাধা ও গোবিন্দের মন্দির থেকে বের হয়ে জমিদার বাড়ির দিকে একটু এগোলেই হাতের ডানে দেখা মিলবে কালী মন্দিরের, এরপরই জমিদার বাড়ির প্রবেশ দুয়ার, বর্তমানে যারপরনাই ভগ্নদশা। দুয়ারের ডান দিকে ক্ষয়ে যাওয়া একটি সিংহ মূর্তি এখনো পাহাড়া দিচ্ছে বাড়িটিকে। তবে বাম দিকের সিংহ মূর্তিটি এখন আর নেই। সিংহ দুয়ার ভেদ করে বাড়ির দিকে এগোতে থাকলে দুপাশের দেয়ালে ৮-১০টি অর্ধ ভগ্নপ্রায় নারী মূর্তির দেখা মিলবে, আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতেই যেনো তারা দাঁড়িয়ে ছিল।

বাড়ির কাছাকাছি যেতেই আমরা আন্দাজ করতে পারলাম এখনও এখানে বেশ অনেকগুলো পরিবারের বসবাস এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জানতে পারলাম জমিদার বংশের উত্তরসূরীরা প্রাচীন গৌরবকে লালন করে এখনও এখানে বসবাস করছেন। সাধারণত দেশের সকল জমিদার বাড়ির ক্ষেত্রেই দেখা যায় রাজ পরিবারের বংশধররা ১৯৪৭ এর দেশভাগের পর কিংবা মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন এবং তাঁদের সম্পত্তি সরকার দখলে নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করছে কিংবা বিভিন্ন কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু আড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে এসে আমরা দেখলাম এখনও জমিদার বংশের লোকেরাই বাড়ির মালিকানা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং এর সূত্র ধরেই অন্য সকল ঐতিহাসিক স্থাপনার সঙ্গে কিছু মৌলিক পার্থক্য লক্ষ্য করলাম।

এবার মূল বাড়িতে প্রবেশ এবং ঘুরে দেখার পালা। (চলবে…)

পড়ুন,

আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, করুণ ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী, পর্ব – ০২


Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, করুণ ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী, পর্ব – ০১

Update Time : 01:34:29 pm, Thursday, 11 July 2019

ফাহমিদা আফরিন সিথি: ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকে জাতি হিসেবে আমরা বরাবরই বেশ সমৃদ্ধ ও গর্বিত। আমাদের দেশের প্রতি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে নানা পুরাকীর্তি ও লোকগাথা। শত শত জানা-অজানা ইতিহাস আজও স্থান করে আছে আমাদের এই ভূখন্ডে। ইতিহাস পাঠ এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘুরে দেখার একটা আগ্রহ ছোট থেকেই মনে কাজ করতো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে পরিবার থেকে যে স্বাধীনতাটুকু পেয়েছি, তা কাজে লাগিয়ে ছোটবেলার সেই আগ্রহকে বাস্তবে রূপ দেয়ার এবং সকলকে তা জানানোর ক্ষুদ্র প্রয়াসেই আজকের এ লিখা।

আমার জন্মস্থান, ছেলেবেলা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবকিছুই ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলায়। সাভার উপজেলা দেশের স্বল্পকিছু স্বনামধন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে একটি কেননা এখানেই রয়েছে মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ইতিহাস জানার এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘুরে দেখার ক্ষেত্রে তাই প্রথমে আমার নিজ উপজেলা সাভারকেই বেছে নিলাম। গুগলে খুঁজে খুঁজে সাভার উপজেলায় অবস্থিত সকল জমিদার বাড়ির একটা তালিকা বের করলাম এবং ভ্রমণ সুযোগের অপেক্ষায় দিন কাটতে লাগলো।

অবশেষে গত ০৮ জুলাই, ২০১৯ (সোমবার) কাঙ্ক্ষিত সুযোগ আসলো। লক্ষ্য সাভার উপজেলার শতাব্দী প্রাচীন রাজবাড়ি, “আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি”। ভ্রমণ সঙ্গী বন্ধু ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল এবং সারোয়ার হোসেন। অনেক ঘাটাঘাটি করেও গুগল ম্যাপে সঠিক লোকেশন বের করতে পারলাম না। তবুও জায়গাটির অবস্থান সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা পাওয়া গেলো। সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিক্সা/ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সায় করে ভাটপাড়া-আড়াপাড়া এলাকায় গেলেই খোঁজ মিলবে জমিদার বাড়ির। ইতোমধ্যে ইন্টারনেট থেকে কিছু রিভিউ পড়ে নিয়েছি জায়গাটি সম্পর্কে।

বেলা বারোটা নাগাদ আমরা ক্যাম্পাস থেকে রওনা হলাম। বাসে করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৌঁছে গেলাম সাভার বাসস্ট্যান্ডে। বাসস্ট্যান্ডে নেমে ওভারব্রিজ দিয়ে পার হয়ে দক্ষিণ দিকে আসলাম। একটি মিষ্টির দোকানে আড়াপাড়া জমিদার বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতেই উনি বললেন সামনে অটো আছে, ওগুলো আড়াপাড়া যায়। যথারীতি আমরা তিনজন একটু সামনে এগিয়ে আড়াপাড়ার কথা বলে একটি অটোতে উঠলাম। এখানে রাস্তা কিছুটা ভাঙা এবং সরু হওয়ায় এবং যানবাহনের সংখ্যা অত্যধিক থাকায় বেশ কিছুক্ষণ আমাদেরকে অটো-রিক্সার লম্বা জ্যামে শব্দ দূষণের মধ্যে কাটাতে হয়। রাস্তার সংকীর্ণতা, অটোর হর্ণ, রিক্সার বেলের শব্দ আর প্রাইভেট কারের হর্ণের সম্মিলনে এক মহা কোলাহল পূর্ণ দূষিত পরিবেশ। প্রায় দশ-পনেরো মিনিট এই অচলাবস্থায় কাটানোর পর মুক্তি মিললো। আমরা এগিয়ে চললাম আমাদের গন্তব্যের দিকে। প্রায় পনেরো মিনিট পর অটো ড্রাইভার আমাদেরকে নামিয়ে দিলেন বাড্ডা-ভাটপাড়া রোডে এবং জমিদার বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিলেন। জনপ্রতি ভাড়া ১০/- করে মিটিয়ে দিয়ে আমরা আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁটতে আরম্ভ করলাম।

এদিক-সেদিক কিছুক্ষণ বিক্ষিপ্তভাবে ভ্রমণের পর রাস্তায় বেশ কিছু লোকের সাহায্য নিয়ে অবশেষে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দেখা পেলাম। ইতোমধ্যে হাঁটতে হাঁটতে আমরা বেশ বুঝতে পারলাম এলাকাটিতে আধুনিকতার ছাপ তেমন পড়েনি, বরঞ্চ সাভারের অন্যান্য প্রায় সব এলাকার চেয়েই এলাকাটি পিছিয়ে রয়েছে। জায়গাটি হিন্দু অধ্যুষিত।

জমিদার বাড়ির শুরুতেই আমরা দেখতে পেলাম জমিদার প্রতিষ্ঠিত, ইতিহাস গুপ্ত রাখা রাধা গোবিন্দ বিদেহ মন্দির। তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে বড় একটি পুকুর। পুকুরটির নাম সবুজ পানা  পুকুর। এটি এখনও এখানকার লোকেরা যাবতীয় দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে। মন্দিরে প্রবেশ দরজাটি কাঠের তৈরী এবং দুপাশে দু’টি করে জানালা রয়েছে। মন্দিরের ভেতরে ঢুঁ মেরে বুঝতে পারলাম মন্দি নতুন কিছু ঘর তৈরী করে এখানেও লোকজন থাকতে আরম্ভ করেছে এবং কয়েকজন মহিলাকে ঘুরঘুর করতে দেখলাম। তাই আমার দুই বন্ধুকে মূল দরজার কাছে রেখে আমি ভেতরে থাকা একজন নারীর অনুমতি চাইতে গেলাম মন্দিরটা ঘুরে দেখার জন্য। অনুমতি মিললো। মূল দরজা পেরুতেই একটু খালি জায়গা  এবং এর পরে মন্দিরের মূল ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। এখানে এখনও নিয়মিত পূজা অর্চনা করা হয়। মন্দিরের ডান দিকে আছে তুলসি মঞ্চ। পাঁচটি সিঁড়ি ও ছয়টি স্তম্ভ দ্বারা নির্মিত এ মন্দিরটির অভ্যন্তরে রয়েছে রাধা ও গোবিন্দের (কৃষ্ণ) মূর্তি। আমরা চটজলদি মন্দিরের এবং আশপাশের বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম।

আড়াপাড়া
রাধা-গোবিন্দ বিদেহ মন্দির, যার দেখা মিলবে জমিদার বাড়ি প্রবেশের শুরুতেই

রাধা ও গোবিন্দের মন্দির থেকে বের হয়ে জমিদার বাড়ির দিকে একটু এগোলেই হাতের ডানে দেখা মিলবে কালী মন্দিরের, এরপরই জমিদার বাড়ির প্রবেশ দুয়ার, বর্তমানে যারপরনাই ভগ্নদশা। দুয়ারের ডান দিকে ক্ষয়ে যাওয়া একটি সিংহ মূর্তি এখনো পাহাড়া দিচ্ছে বাড়িটিকে। তবে বাম দিকের সিংহ মূর্তিটি এখন আর নেই। সিংহ দুয়ার ভেদ করে বাড়ির দিকে এগোতে থাকলে দুপাশের দেয়ালে ৮-১০টি অর্ধ ভগ্নপ্রায় নারী মূর্তির দেখা মিলবে, আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতেই যেনো তারা দাঁড়িয়ে ছিল।

বাড়ির কাছাকাছি যেতেই আমরা আন্দাজ করতে পারলাম এখনও এখানে বেশ অনেকগুলো পরিবারের বসবাস এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জানতে পারলাম জমিদার বংশের উত্তরসূরীরা প্রাচীন গৌরবকে লালন করে এখনও এখানে বসবাস করছেন। সাধারণত দেশের সকল জমিদার বাড়ির ক্ষেত্রেই দেখা যায় রাজ পরিবারের বংশধররা ১৯৪৭ এর দেশভাগের পর কিংবা মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন এবং তাঁদের সম্পত্তি সরকার দখলে নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করছে কিংবা বিভিন্ন কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু আড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে এসে আমরা দেখলাম এখনও জমিদার বংশের লোকেরাই বাড়ির মালিকানা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং এর সূত্র ধরেই অন্য সকল ঐতিহাসিক স্থাপনার সঙ্গে কিছু মৌলিক পার্থক্য লক্ষ্য করলাম।

এবার মূল বাড়িতে প্রবেশ এবং ঘুরে দেখার পালা। (চলবে…)

পড়ুন,

আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, করুণ ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী, পর্ব – ০২