১০:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০২

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: বালিয়াটি প্রাসাদ স্থানীয়ভাবে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নামেই পরিচিত। খ্রিস্টীয় উনিশ শতকের দিকে এই বাড়ি নির্মিত হয়। একটি নিম্নবিত্ত সাহা পরিবার থেকেই বালিয়াটি জমিদার বংশের উদ্ভব। বালিয়াটির জমিদারদের পূর্বপুরুষ গোবিন্দ রায় সাহা ছিলেন একজন ধনাঢ্য লবণ ব্যবসায়ী। বালিয়াটির জমিদাররা উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে আরম্ভ করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গিয়েছেন, যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

স্থানীয় লোকদের মতে, বাড়ির মূল প্রবেশদ্বার কাঠের তৈরি ছিল। এখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে বড় আকারের পাঁচটি ভবন। রাজবাড়িতে প্রবেশের পরই প্রথম সারিতে যে চারটি প্রাসাদের কথা পূর্বের পর্বে উল্লেখ করেছিলাম, সেগুলোর নির্মাণ শৈলী মোটামুটি একই ধাচের। প্রতিটা বাড়িই প্রায় ৫০ ফিট উঁচু! এক একটা প্রাসাদ এতোটাই কারুকাজে পূর্ণ যে প্রতি মুহূর্তেই বিস্মিত হচ্ছি। আট ইঞ্চি করে সিঁড়ির উত্থান আর বিশাল বিশাল স্তম্ভগুলো চুন-সুরকি আর ইট দিয়ে কীভাবে কত পরিশ্রমের মাধ্যমে যে নির্মিত হয়েছিলো তা ভেবেই আমরা হতবাক। প্রতিটা স্তম্ভের স্তম্ভমূল ছয় ফিটের অধিক।

গ্রিক স্থাপত্যের মতোই কারুকাজ খচিত, স্তম্ভের ওপরের দিকটা প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মিশ্রণে এই প্রাসাদগুলো তৈরি করা হয়েছে। ফ্লোরাল টপ সহ কোরেন্থিয়ান ধাঁচের পিলার আছে চার প্রাসাদেই। মাঝখানের দুটি প্রাসাদ দুই তলা এবং দুই পার্শ্বের দুটো প্রাসাদ তিন তলা। এরমধ্যে ১টি প্রাসাদে আগে কলেজ ছিল, বর্তমানে তা পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

গোবিন্দ রায়ের পরবর্তী বংশধর ছিলেন দাধী রাম, পণ্ডিত রাম, আনন্দ রাম ও গোলাপ রাম। এই পরিবারে স্মরণীয় অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন— নিত্যানন্দ রায় চৌধুরী, বৃন্দাবন চন্দ্র, জগন্নাথ রায়, কানাই লাল, কিশোরী লাল, যশোর্ধ লাল, হীরা লাল রায় চৌধুরী, ঈশ্বর চন্দ্র রায় চৌধুরী, হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী প্রমুখ। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এদেরই বংশধর বাবু কিশোরী লাল রায়। আনুমানিক ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয়। জনশ্রুতি আছে ১৩০০ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ এই বাড়ির জমিদাররা গৃহপ্রবেশ করেন। এই জমিদার বাড়ি ৫.৮৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।

বালিয়াটিতে প্রতিটি প্রাসাদের গায়েই ১-২-৩-৪ আকারে সিরিয়াল নাম্বার লিখে দেয়া আছে। ১নং প্রাসাদের মাঝের স্তম্ভের পিছনে থাকা গোলাকার লৌহ নির্মিত সিঁড়ি আর দেয়ালের উপরের নিঁখুত কাজগুলো যতই প্রাসাদের ভেতরে টানুক, তালাবন্ধ থাকার জন্য ভেতরে ঢুকতে পারলাম না। মূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ আজও চোখে পড়ে।

২নং প্রাসাদের ভেতরেই বর্তমান জাদুঘর। এর দ্বিতীয় তলায় একটি রংমহল রয়েছে। এখানে জমিদারদের ব্যবহৃত নিদর্শনাদি দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে। নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে জমিদারদের ব্যবহৃত অসংখ্য সিন্দুক, ছোট বড় আয়না, ঝাড়বাতি, লণ্ঠন, শ্বেত পাথরের ষাঁড়, শ্বেত পাথরের টেবিল, পালঙ্ক, আলনা, কাঠ এবং বেতের চেয়ারসহ আরো অনেক নিদর্শন। মজলিস কক্ষে মূল্যবান ঝাড়বাতি রয়েছে। মজলিস কক্ষটির দেয়ালে হাতে আঁকা ছবি আছে। এর অন্দর মহলে রয়েছে তিনটি অট্টালিকা। এখানে ছিল অতিথিদের থাকার জায়গা, রন্ধনশালা, সহিস আর পরিচারকদের থাকার ঘর।

৩ নম্বর প্রাসাদেরও দরজা বন্ধ, আর বাইরে দেখতেও একই। কিন্তু এক জাদুঘর আর বাইরে ঘুরতে ঘুরতে তখন খানিকটা রাগই লাগছিল। তাই এবার বাড়ির অন্দরমহলগুলোর দিকে নজর দিলাম। অন্দর মহলের স্থাপত্যও বেশ চোখে পড়ার মতো! ভেতরের দিকটা ঘুরতে ঘুরতে, পুরাকালের নানা কেচ্ছা কাহিনী কল্পনা করতে করতে এবং মাঝে মাঝেই কিছু ফটোসেশন শেষ করে যখন তিন বন্ধুতে ভাবছি অনেক হলো, এবারে ফেরা যাক! সামনে তখন জমিদারবাড়ির পুকুর। ৬টা সিঁড়ি পুকুরের দিকে নেমে গেছে। বেশিরভাগই নতুন নতুন সংস্কার করা হয়েছে বুঝা গেলো। শান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এ পুকুরের চারপাশে, যা দেখতে সত্যিই অতি মনোরম। সব মিলিয়ে ৩ টা কুয়ো চোখে পড়ল।

অন্দর মহলের কারুকাজ দেখে ৪ নম্বর প্রাসাদের সামনে এলাম। বালিয়াটিতে ১৯২৩ সালের দিকে জমিদার কিশোরী লাল রায় চৌধুরী নিজ ব্যয়ে এই ভবনেই একটি এলোপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। তবে যথারীতি এ বাড়িটাও তালাবদ্ধ থাকায় এবার ফেরার পথ ধরলাম।

আমাদের ঘুরতে ঘুরতে প্রায় সাড়ে চারটে বেজে গেল। মূল গেইট দিয়ে বেরিয়ে এসেই পূর্বের ন্যায় ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সায় সাটুরিয়ার পথ ধরলাম এবং সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এসবি লিংকের বাসে করে সাভারের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। পিছু ফিরে তাকাতেই শুধু মনে হলো বালিয়াটি যেনো তার সবটুকু সৌন্দর্য দিয়ে আমায় আকৃষ্ট করছে আর আমাকে থেকে যেতে বলছে। কিন্তু পৃথিবীর কোনো কিছুই যেমন থেমে যায়না, থেমে থাকেনা, আমাকেও একই সূত্র মেনে চলে আসতে হলো, ফেলে আসলাম ইতিহাসের অনন্য এক স্থাপনাকে।

বালিয়াটি
                                                                                              লেখক এবং লেখকের ভ্রমণসঙ্গীরা

বাসে বসে আমি, সিথি, নাফিস অনেকক্ষণ জমিদার বাড়ির নানাদিক নিয়ে আলোচনা করলাম। নগর পরিকল্পনার ছাত্র হওয়ায় বাড়ির  আর্কিটেকচারাল ভিউ বা স্থাপত্যশৈলীগুলো আমরা খুব খুটিয়ে খুটিয়েই দেখেছিলাম। একটা ব্যাপারে সবাই একমত হলাম যে, কেউ যদি একদিনের জন্য ঢাকার আশপাশে ঘুরতে চান, তাহলে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি হতে পারে তার জন্য আদর্শ এক স্থান!

দিনভর ভ্রমণের পরিসমাপ্তিতে সবাই আশঙ্কা ভরা কণ্ঠে একবাক্যে বলে উঠলাম, “আশা রাখি বাংলাদেশ সরকার বালিয়াটিকে দেখে রাখবে! নাহলে বালিয়াটির ভাগ্যেও কঙ্কাল হয়ে মারা যাওয়া ছাড়া অন্য কিছু জুটবে না!”

আরও পড়ুন,

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০১

 (https://www.nabajug.com/feature/news/347)

 

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০২

প্রকাশ: ১২:৪৩:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০১৯

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: বালিয়াটি প্রাসাদ স্থানীয়ভাবে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নামেই পরিচিত। খ্রিস্টীয় উনিশ শতকের দিকে এই বাড়ি নির্মিত হয়। একটি নিম্নবিত্ত সাহা পরিবার থেকেই বালিয়াটি জমিদার বংশের উদ্ভব। বালিয়াটির জমিদারদের পূর্বপুরুষ গোবিন্দ রায় সাহা ছিলেন একজন ধনাঢ্য লবণ ব্যবসায়ী। বালিয়াটির জমিদাররা উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে আরম্ভ করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গিয়েছেন, যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

স্থানীয় লোকদের মতে, বাড়ির মূল প্রবেশদ্বার কাঠের তৈরি ছিল। এখানে পূর্ববাড়ি, পশ্চিমবাড়ি, উত্তরবাড়ি, মধ্যবাড়ি এবং গোলাবাড়ি নামে বড় আকারের পাঁচটি ভবন। রাজবাড়িতে প্রবেশের পরই প্রথম সারিতে যে চারটি প্রাসাদের কথা পূর্বের পর্বে উল্লেখ করেছিলাম, সেগুলোর নির্মাণ শৈলী মোটামুটি একই ধাচের। প্রতিটা বাড়িই প্রায় ৫০ ফিট উঁচু! এক একটা প্রাসাদ এতোটাই কারুকাজে পূর্ণ যে প্রতি মুহূর্তেই বিস্মিত হচ্ছি। আট ইঞ্চি করে সিঁড়ির উত্থান আর বিশাল বিশাল স্তম্ভগুলো চুন-সুরকি আর ইট দিয়ে কীভাবে কত পরিশ্রমের মাধ্যমে যে নির্মিত হয়েছিলো তা ভেবেই আমরা হতবাক। প্রতিটা স্তম্ভের স্তম্ভমূল ছয় ফিটের অধিক।

গ্রিক স্থাপত্যের মতোই কারুকাজ খচিত, স্তম্ভের ওপরের দিকটা প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মিশ্রণে এই প্রাসাদগুলো তৈরি করা হয়েছে। ফ্লোরাল টপ সহ কোরেন্থিয়ান ধাঁচের পিলার আছে চার প্রাসাদেই। মাঝখানের দুটি প্রাসাদ দুই তলা এবং দুই পার্শ্বের দুটো প্রাসাদ তিন তলা। এরমধ্যে ১টি প্রাসাদে আগে কলেজ ছিল, বর্তমানে তা পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

গোবিন্দ রায়ের পরবর্তী বংশধর ছিলেন দাধী রাম, পণ্ডিত রাম, আনন্দ রাম ও গোলাপ রাম। এই পরিবারে স্মরণীয় অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন— নিত্যানন্দ রায় চৌধুরী, বৃন্দাবন চন্দ্র, জগন্নাথ রায়, কানাই লাল, কিশোরী লাল, যশোর্ধ লাল, হীরা লাল রায় চৌধুরী, ঈশ্বর চন্দ্র রায় চৌধুরী, হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী প্রমুখ। ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এদেরই বংশধর বাবু কিশোরী লাল রায়। আনুমানিক ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয়। জনশ্রুতি আছে ১৩০০ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ এই বাড়ির জমিদাররা গৃহপ্রবেশ করেন। এই জমিদার বাড়ি ৫.৮৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।

বালিয়াটিতে প্রতিটি প্রাসাদের গায়েই ১-২-৩-৪ আকারে সিরিয়াল নাম্বার লিখে দেয়া আছে। ১নং প্রাসাদের মাঝের স্তম্ভের পিছনে থাকা গোলাকার লৌহ নির্মিত সিঁড়ি আর দেয়ালের উপরের নিঁখুত কাজগুলো যতই প্রাসাদের ভেতরে টানুক, তালাবন্ধ থাকার জন্য ভেতরে ঢুকতে পারলাম না। মূল ভবনগুলোর সামনের দেয়ালজুড়ে নানা রকম কারুকাজ আজও চোখে পড়ে।

২নং প্রাসাদের ভেতরেই বর্তমান জাদুঘর। এর দ্বিতীয় তলায় একটি রংমহল রয়েছে। এখানে জমিদারদের ব্যবহৃত নিদর্শনাদি দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে। নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে জমিদারদের ব্যবহৃত অসংখ্য সিন্দুক, ছোট বড় আয়না, ঝাড়বাতি, লণ্ঠন, শ্বেত পাথরের ষাঁড়, শ্বেত পাথরের টেবিল, পালঙ্ক, আলনা, কাঠ এবং বেতের চেয়ারসহ আরো অনেক নিদর্শন। মজলিস কক্ষে মূল্যবান ঝাড়বাতি রয়েছে। মজলিস কক্ষটির দেয়ালে হাতে আঁকা ছবি আছে। এর অন্দর মহলে রয়েছে তিনটি অট্টালিকা। এখানে ছিল অতিথিদের থাকার জায়গা, রন্ধনশালা, সহিস আর পরিচারকদের থাকার ঘর।

৩ নম্বর প্রাসাদেরও দরজা বন্ধ, আর বাইরে দেখতেও একই। কিন্তু এক জাদুঘর আর বাইরে ঘুরতে ঘুরতে তখন খানিকটা রাগই লাগছিল। তাই এবার বাড়ির অন্দরমহলগুলোর দিকে নজর দিলাম। অন্দর মহলের স্থাপত্যও বেশ চোখে পড়ার মতো! ভেতরের দিকটা ঘুরতে ঘুরতে, পুরাকালের নানা কেচ্ছা কাহিনী কল্পনা করতে করতে এবং মাঝে মাঝেই কিছু ফটোসেশন শেষ করে যখন তিন বন্ধুতে ভাবছি অনেক হলো, এবারে ফেরা যাক! সামনে তখন জমিদারবাড়ির পুকুর। ৬টা সিঁড়ি পুকুরের দিকে নেমে গেছে। বেশিরভাগই নতুন নতুন সংস্কার করা হয়েছে বুঝা গেলো। শান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এ পুকুরের চারপাশে, যা দেখতে সত্যিই অতি মনোরম। সব মিলিয়ে ৩ টা কুয়ো চোখে পড়ল।

অন্দর মহলের কারুকাজ দেখে ৪ নম্বর প্রাসাদের সামনে এলাম। বালিয়াটিতে ১৯২৩ সালের দিকে জমিদার কিশোরী লাল রায় চৌধুরী নিজ ব্যয়ে এই ভবনেই একটি এলোপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। তবে যথারীতি এ বাড়িটাও তালাবদ্ধ থাকায় এবার ফেরার পথ ধরলাম।

আমাদের ঘুরতে ঘুরতে প্রায় সাড়ে চারটে বেজে গেল। মূল গেইট দিয়ে বেরিয়ে এসেই পূর্বের ন্যায় ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সায় সাটুরিয়ার পথ ধরলাম এবং সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে এসবি লিংকের বাসে করে সাভারের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। পিছু ফিরে তাকাতেই শুধু মনে হলো বালিয়াটি যেনো তার সবটুকু সৌন্দর্য দিয়ে আমায় আকৃষ্ট করছে আর আমাকে থেকে যেতে বলছে। কিন্তু পৃথিবীর কোনো কিছুই যেমন থেমে যায়না, থেমে থাকেনা, আমাকেও একই সূত্র মেনে চলে আসতে হলো, ফেলে আসলাম ইতিহাসের অনন্য এক স্থাপনাকে।

বালিয়াটি
                                                                                              লেখক এবং লেখকের ভ্রমণসঙ্গীরা

বাসে বসে আমি, সিথি, নাফিস অনেকক্ষণ জমিদার বাড়ির নানাদিক নিয়ে আলোচনা করলাম। নগর পরিকল্পনার ছাত্র হওয়ায় বাড়ির  আর্কিটেকচারাল ভিউ বা স্থাপত্যশৈলীগুলো আমরা খুব খুটিয়ে খুটিয়েই দেখেছিলাম। একটা ব্যাপারে সবাই একমত হলাম যে, কেউ যদি একদিনের জন্য ঢাকার আশপাশে ঘুরতে চান, তাহলে বালিয়াটি জমিদারবাড়ি হতে পারে তার জন্য আদর্শ এক স্থান!

দিনভর ভ্রমণের পরিসমাপ্তিতে সবাই আশঙ্কা ভরা কণ্ঠে একবাক্যে বলে উঠলাম, “আশা রাখি বাংলাদেশ সরকার বালিয়াটিকে দেখে রাখবে! নাহলে বালিয়াটির ভাগ্যেও কঙ্কাল হয়ে মারা যাওয়া ছাড়া অন্য কিছু জুটবে না!”

আরও পড়ুন,

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০১

 (https://www.nabajug.com/feature/news/347)