Dhaka 11:09 am, Saturday, 2 December 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০১

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:34:15 pm, Thursday, 4 July 2019
  • 91 Time View

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: ঘড়িতে তখন বেলা এগারোটা। দ্রুত দিনের সব ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ায় সারাদিনের অখন্ড অবসর! হঠাৎ খেয়াল হলো বালিয়াটি থেকে এক ঘুরান দিয়ে আসা যায়! যেই ভাবা সেই কাজ! কাছের বন্ধুবান্ধব সবাইকেই ঝটিকা ট্যুরের ব্যাপারে প্রস্তাব করলাম। হঠাৎ সফরের ক্ষেত্রে যা ঘটে, আমাদের ভাগ্যেও তাই হলো। দু-তিনজন বাদে প্রায় সবাই নানান কাজের ব্যস্ততা-বাহানায় সঙ্গী হতে অপারগতা জানালো। কিন্তু আজ মন নাছোড়বান্দা! যে দু-তিনজন রাজি হয়, তাদের নিয়েই যাবো বলে মনস্থির করলাম!

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। অবস্থান সাটুরিয়া উপজেলা, জেলা মানিকগঞ্জ। আদতে মানিকগঞ্জ জেলায় পড়লেও ঢাকা জেলার (ধামরাই উপজেলার পাশে) একদম লাগোয়া এর অবস্থান। যদিও বেশ পুরোনো এবং বনেদী জমিদার বাড়ি, তবুও বেশ অনেকটা প্রচারের আলোর বাইরে রয়ে গিয়েছে প্রাসাদটি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হবার সুবাদেই প্রথম বালিয়াটি জমিদারীর কথা জানতে পারি, সেও এক-দেড় বছর আগেকার কথা। তখনই যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও, মাঝে এই কাজ, সেই কাজ, নাই কাজ তো খই ভাঁজ অবস্থায় পড়ে আর যাওয়া হয়নি। অবশেষে ০১ জুলাই, ২০১৯, একদম ঝটিকা সফরে ঘুরে এলাম ঐতিহ্যবাহী বালিয়াটি জমিদার বাড়ি থেকে, ভগবান জগন্নাথের ভক্ত হিসেবে যে জমিদার পরিবারের সুনাম ছিলো দেশজুড়ে! সঙ্গী সিথি, হ্যাপি আর নাফিস।

বেলা এগারোটা বেজে ত্রিশ মিনিট। আমি এবং সফরসঙ্গী বাকি তিনজনে মিলে জাবি ক্যাম্পাসের মেইন গেইট, অর্থাৎ ডেইরী গেইটের সামনে থেকে এস.বি. লিঙ্ক পরিবহনের সাটুরিয়াগামী একটি লোকাল বাসে উঠলাম। ইতোমধ্যে ট্যুর গ্রুপ থেকে জেনে নিয়েছি সাটুরিয়ায় প্রবেশ করে সেখান থেকে অটো/সিএনজি দিয়ে সরাসরি বালিয়াটি যেতে হয়। তাই আপাত প্রাথমিক লক্ষ্য সাটুরিয়া উপজেলায় প্রবেশ, ভাড়া জনপ্রতি ৩৫-৫০/-, যার কাছে যেমন পারছে, রাখছে! লোকাল বাস হওয়ায় প্রথমত বাসের সীটে আমাদের জায়গা হলো না, প্রায় পুরো রাস্তা দাঁড়িয়ে যেতে হলো এবং রাস্তা বাজে হওয়ার দরুণ ধুলোবালিতে নাক-মুখ সয়লাব হয়ে গেলো! ইতোমধ্যে সাভার পেরিয়ে ধামরাই উপজেলার অর্ধেক পৌছে গিয়েছি, তখনই বান্ধবী হ্যাপির বাড়ি থেকে ফোন আসলো। আর্জেন্ট বাড়ি পৌছুতে হবে তাকে! অগত্যা তাকে পথিমধ্যে নামিয়ে, সাভারের রিটার্ন বাসে তুলে দিয়ে আমরা বাকি তিনজন, অর্থাৎ সিথি, আমি আর নাফিস মিলে যাত্রা আরম্ভ করলাম!

প্রায় দেড় ঘন্টার জার্নি শেষে, বেলা একটা নাগাদ আমরা সাটুরিয়া বাসস্টপে নামলাম। সেখানে নেমেই প্রথমে ঠান্ডা পানীয় পান পূর্বক একটি ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সায় করে দশ মিনিটের মাঝেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য, বালিয়াটি প্রাসাদের সামনে উপস্থিত হলাম। এটুকু পথের জন্য আমাদের গুণতে হলো জনপ্রতি ভাড়া ১০/- করে। বালিয়াটি প্রাসাদের প্রকাণ্ড ইমারতের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথম যে ব্যাপারটা আমাদের মাথায় কাজ করলো, এত বড় বাড়ি ঘুরে দেখার আগে দুপুরের খাবার আগে খেয়ে নেয়া আবশ্যক!!!! এদিকে সন্ধ্যের আগেই ফিরে আসার তাড়া ছিলো! তাই তিনজনে মিলে প্রাসাদের সামনেই স্থান করে নেয়া একটি হোটেলে ভোজন পর্ব সেরে নিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ দ্রুতই আমাদের কথাবার্তায় বুঝতে পারলেন আমরা লোকাল কেউ নই, বেড়াতে এসেছি, সোজা ভাষায় ট্যুরিস্ট! তাই যথারীতি খাবারের দাম রাখার ক্ষেত্রেও তারা একদমই কার্পণ্য করলেন না!

যাহোক, খাওয়াদাওয়া শেষে এবার প্রাসাদ ঘুরে দেখার পালা! প্রাসাদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন রয়েছে এবং ভেতরে সংস্কারকাজ চলছে। প্রাসাদে ঢুকতে টিকেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জন প্রতি দাম ২০ টাকা মাত্র। প্রাসাদের সামনেই রয়েছে বিরাটাকৃতির এক পুকুর, চারটে প্রবেশ দ্বার এবং প্রতিটি প্রবেশ দ্বারের উপরেই রয়েছে বিশাল এক সিংহ মূর্তি, যা রাজবংশের রুদ্ররূপের পরিচায়কও বটে! মূল গেইট দিয়ে প্রবেশ করেই চোখে পড়লো বিশাল বিশাল চার চারটে প্রাসাদ ভবন এবং নৃত্যশালা! এসব দেখে বালিয়াটি সম্পর্কে ইতোমধ্যে মনে মনে যা ধারণা করেছিলাম, তার প্রায় সবই ধুলিস্মাৎ হয়ে গেলো! তবে আমাদের বিষ্মিত হবার পালা আরও বাকিই ছিলো! (চলবে…)

 

পড়ুন,

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০২

(https://www.nabajug.com/feature/news/365)

 


Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০১

Update Time : 05:34:15 pm, Thursday, 4 July 2019

ফাহিম আহম্মেদ মন্ডল: ঘড়িতে তখন বেলা এগারোটা। দ্রুত দিনের সব ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ায় সারাদিনের অখন্ড অবসর! হঠাৎ খেয়াল হলো বালিয়াটি থেকে এক ঘুরান দিয়ে আসা যায়! যেই ভাবা সেই কাজ! কাছের বন্ধুবান্ধব সবাইকেই ঝটিকা ট্যুরের ব্যাপারে প্রস্তাব করলাম। হঠাৎ সফরের ক্ষেত্রে যা ঘটে, আমাদের ভাগ্যেও তাই হলো। দু-তিনজন বাদে প্রায় সবাই নানান কাজের ব্যস্ততা-বাহানায় সঙ্গী হতে অপারগতা জানালো। কিন্তু আজ মন নাছোড়বান্দা! যে দু-তিনজন রাজি হয়, তাদের নিয়েই যাবো বলে মনস্থির করলাম!

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। অবস্থান সাটুরিয়া উপজেলা, জেলা মানিকগঞ্জ। আদতে মানিকগঞ্জ জেলায় পড়লেও ঢাকা জেলার (ধামরাই উপজেলার পাশে) একদম লাগোয়া এর অবস্থান। যদিও বেশ পুরোনো এবং বনেদী জমিদার বাড়ি, তবুও বেশ অনেকটা প্রচারের আলোর বাইরে রয়ে গিয়েছে প্রাসাদটি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হবার সুবাদেই প্রথম বালিয়াটি জমিদারীর কথা জানতে পারি, সেও এক-দেড় বছর আগেকার কথা। তখনই যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও, মাঝে এই কাজ, সেই কাজ, নাই কাজ তো খই ভাঁজ অবস্থায় পড়ে আর যাওয়া হয়নি। অবশেষে ০১ জুলাই, ২০১৯, একদম ঝটিকা সফরে ঘুরে এলাম ঐতিহ্যবাহী বালিয়াটি জমিদার বাড়ি থেকে, ভগবান জগন্নাথের ভক্ত হিসেবে যে জমিদার পরিবারের সুনাম ছিলো দেশজুড়ে! সঙ্গী সিথি, হ্যাপি আর নাফিস।

বেলা এগারোটা বেজে ত্রিশ মিনিট। আমি এবং সফরসঙ্গী বাকি তিনজনে মিলে জাবি ক্যাম্পাসের মেইন গেইট, অর্থাৎ ডেইরী গেইটের সামনে থেকে এস.বি. লিঙ্ক পরিবহনের সাটুরিয়াগামী একটি লোকাল বাসে উঠলাম। ইতোমধ্যে ট্যুর গ্রুপ থেকে জেনে নিয়েছি সাটুরিয়ায় প্রবেশ করে সেখান থেকে অটো/সিএনজি দিয়ে সরাসরি বালিয়াটি যেতে হয়। তাই আপাত প্রাথমিক লক্ষ্য সাটুরিয়া উপজেলায় প্রবেশ, ভাড়া জনপ্রতি ৩৫-৫০/-, যার কাছে যেমন পারছে, রাখছে! লোকাল বাস হওয়ায় প্রথমত বাসের সীটে আমাদের জায়গা হলো না, প্রায় পুরো রাস্তা দাঁড়িয়ে যেতে হলো এবং রাস্তা বাজে হওয়ার দরুণ ধুলোবালিতে নাক-মুখ সয়লাব হয়ে গেলো! ইতোমধ্যে সাভার পেরিয়ে ধামরাই উপজেলার অর্ধেক পৌছে গিয়েছি, তখনই বান্ধবী হ্যাপির বাড়ি থেকে ফোন আসলো। আর্জেন্ট বাড়ি পৌছুতে হবে তাকে! অগত্যা তাকে পথিমধ্যে নামিয়ে, সাভারের রিটার্ন বাসে তুলে দিয়ে আমরা বাকি তিনজন, অর্থাৎ সিথি, আমি আর নাফিস মিলে যাত্রা আরম্ভ করলাম!

প্রায় দেড় ঘন্টার জার্নি শেষে, বেলা একটা নাগাদ আমরা সাটুরিয়া বাসস্টপে নামলাম। সেখানে নেমেই প্রথমে ঠান্ডা পানীয় পান পূর্বক একটি ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সায় করে দশ মিনিটের মাঝেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য, বালিয়াটি প্রাসাদের সামনে উপস্থিত হলাম। এটুকু পথের জন্য আমাদের গুণতে হলো জনপ্রতি ভাড়া ১০/- করে। বালিয়াটি প্রাসাদের প্রকাণ্ড ইমারতের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথম যে ব্যাপারটা আমাদের মাথায় কাজ করলো, এত বড় বাড়ি ঘুরে দেখার আগে দুপুরের খাবার আগে খেয়ে নেয়া আবশ্যক!!!! এদিকে সন্ধ্যের আগেই ফিরে আসার তাড়া ছিলো! তাই তিনজনে মিলে প্রাসাদের সামনেই স্থান করে নেয়া একটি হোটেলে ভোজন পর্ব সেরে নিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ দ্রুতই আমাদের কথাবার্তায় বুঝতে পারলেন আমরা লোকাল কেউ নই, বেড়াতে এসেছি, সোজা ভাষায় ট্যুরিস্ট! তাই যথারীতি খাবারের দাম রাখার ক্ষেত্রেও তারা একদমই কার্পণ্য করলেন না!

যাহোক, খাওয়াদাওয়া শেষে এবার প্রাসাদ ঘুরে দেখার পালা! প্রাসাদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন রয়েছে এবং ভেতরে সংস্কারকাজ চলছে। প্রাসাদে ঢুকতে টিকেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জন প্রতি দাম ২০ টাকা মাত্র। প্রাসাদের সামনেই রয়েছে বিরাটাকৃতির এক পুকুর, চারটে প্রবেশ দ্বার এবং প্রতিটি প্রবেশ দ্বারের উপরেই রয়েছে বিশাল এক সিংহ মূর্তি, যা রাজবংশের রুদ্ররূপের পরিচায়কও বটে! মূল গেইট দিয়ে প্রবেশ করেই চোখে পড়লো বিশাল বিশাল চার চারটে প্রাসাদ ভবন এবং নৃত্যশালা! এসব দেখে বালিয়াটি সম্পর্কে ইতোমধ্যে মনে মনে যা ধারণা করেছিলাম, তার প্রায় সবই ধুলিস্মাৎ হয়ে গেলো! তবে আমাদের বিষ্মিত হবার পালা আরও বাকিই ছিলো! (চলবে…)

 

পড়ুন,

বালিয়াটি প্রাসাদ : সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অপূর্ব মিশ্রণ, পর্ব-০২

(https://www.nabajug.com/feature/news/365)