মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর (৬৫)। আজ (১৫ জুলাই) সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে খ্রিষ্টান কবরস্থানে সমাহিত করা হয় কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পীকে।
প্রিয় এই শিল্পীকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছিলেন রাজশাহী ২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহীর বিভিন্ন সংগীত প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও শিক্ষকরা।
ঢাকা থেকে এন্ড্রু কিশোরকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছিলেন জনপ্রিয় সুরকার ইথুন বাবু, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান প্রমুখ।
দীর্ঘ ১০ মাস ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাজয় মেনে নেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। টানা ৯ মাস সিঙ্গাপুরে ক্যানসারের চিকিৎসাধীন থেকে গত ১১ জুন বিকেলে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফেরেন তিনি। ফিরে যান রাজশাহীতে, যেখান থেকে শুরু।
গত ৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরের মহিষবাথান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এন্ড্রু কিশোর।
তার ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে থাকায় এতদিন মরদেহ সমাহিত না করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিলো। তার ছেলে এন্ড্রু জুনিয়র সপ্তক গত ৭ জুলাই এবং মেয়ে সংজ্ঞা গত ১৩ জুলাই দেশে ফিরেছেন।
বুধবার সকালে রামেক হাসপাতালের হিমঘর থেকে রাজশাহী সিটি চার্চে নেওয়া হয় মরদেহ। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে সমাহিত করা হয়।
প্রিয় শিল্পীর শেষ বিদায়ে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী লিপিকা, পুত্র জয় এন্ড্রু সপ্তক, কন্যা মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা, বোন-ভগ্নিপতিসহ নিকট আত্মীয়রা। এছাড়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে শৈশব ও কৈশোর। রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সংগীতের প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন। এক সময় গানের টানে ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন তিনি।
সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। তার গাওয়া প্রথম চলচ্চিত্রের গান ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’। ১৯৭৭ সালে গানটি ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়। এর পরে এ শিল্পীকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।