নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা পপি। দীর্ঘ সময়ের ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অনেক সুপার হিট ছবি। মাঝে কিছু দিন চলচ্চিত্রে কাজ না করলেও ফের আবার কাজে ফিরেছেন এই নায়িকা। বর্তমান সময়ে শিল্পী নয়, ‘প্রফেশনাল যৌনকর্মী’ দিয়ে ছবি বানানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় এই নায়িকা।
পপি বলেন, এখন ছবি বানাতে গেলে শিল্পীর দরকার হয় না। শিল্পীর খুব অভাব। যৌনকর্মী হলেই ছবি বানানো সম্ভব। খুবই দুঃখজনক, ইন্ডাস্ট্রির এখন বাজে অবস্থা। প্রফেশনাল যৌনকর্মী হলেই ছবি বানানো সম্ভব, বানাচ্ছে। এখানে শিল্পীর কদর নাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা তো আমাদের নিজের কাজের প্রয়োজনে দৌড়াই। কিন্তু শুনি যে, শিল্পীরা শপিং করতে প্রডিউসারদের সঙ্গে বিদেশ যায়। আমরা তো আর ওই ধরনের শিল্পী না।
প্রশ্ন রেখে পপি বলেন, যাদের ব্যক্তিগত ইমেজ খারাপ, তারা শিল্পী হয় কীভাবে? ঘরে জামাই রেখে বদমায়েশি করে বেড়ায়, এরা শিল্পী হয় কীভাবে? চারটা-পাঁচটা বিয়ে করে, অসামাজিক কার্যকলাপ আর টাকার পেছনে বেড়ায় এরা শিল্পী হয় কীভাবে? শিল্পী আর যৌনকর্মীর মধ্যে পার্থক্য আছে। আমাদের দেশে এটারই (শিল্পী) খুব অভাব আছে।
নির্মাতাদের অনুরোধ জানিয়ে জনপ্রিয় এই চিত্রনায়িকা বলেন, যারা ছবি বানাতে এসেছেন, তারা ছবি বানান। আর যারা বদমায়েশির জন্য এসেছেন তাদের জন্য ওটাই পারফেক্ট। ইন্ডাস্ট্রি তো আর বদমায়েশির জায়গা না।
এদিকে, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক সংবাদে বেশ চটেছেন পপি। চুক্তিবদ্ধ হওয়া একটি ছবিতে তার না থাকার বিষয়ে ‘বাদ পড়লেন পপি’, ‘তার জায়গায় নেয়া হচ্ছে কেয়াকে’ বা ‘পপি আউট, কেয়া ইন’ শিরোনামে প্রকাশিত খবের ক্ষেপেছেন তিনি।
জানা গেছে, ‘ইয়েস ম্যাডাম’ নামের একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন পপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ছবিতে থাকছেন না তিনি। তার পরিবর্তে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চিত্রনায়িকা কেয়া। কেয়া চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকে গণমাধ্যমে বেশ কয়েকটি খবর প্রকাশ করা হয়েছে। ‘বাদ পড়লেন পপি’, ‘তার জায়গায় নেয়া হচ্ছে কেয়াকে’ বা ‘পপি আউট, কেয়া ইন’ শিরোনামে খবরগুলো প্রকাশ করা হয়। আর এরপরই পপি এমন সংবাদ দেখে বেশ চটেছেন।
এ বিষয়ে পপি বলেন, গল্প ও চরিত্রটি আমার মনের মতো হয়নি। এছাড়া এতে একাধিক নায়িকা থাকার কারণে ছবিতে অভিনয় করা হয়নি। কিছু সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম, বাদ পড়েছেন পপি বা পপির জায়গায় অমুক লিখে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এটা কেন? আমার জায়গায় অমুক কেন হবে বা বাদ কেন হবে? কারো স্থান কি কেউ নিতে পারে। বাদ দেয়া কথাটি একজন শিল্পীর জন্য খুবই দুঃখজনক ও অসম্মানজনক। বিশ্বের কোথাও কি এমনটি হয়?
নিজের কাজ নিয়ে তিনি বলেন, আজকের এই পপি হতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমি চাইলে, প্রতি মাসে একটি করে ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হতে পারি। ভালো-মন্দ বুঝে অভিনয় করতে চাই। প্রয়োজনে বছরে একটি ছবিতে কাজ করবো তবুর মানের সঙ্গে আপস করব না।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবরের ‘কুলি’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে রূপালি পর্দায় পা রাখেন পপি। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহানের ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’। ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন পপি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা।