Notice: Undefined index: custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/header.php on line 27
Dhaka 7:05 pm, Sunday, 1 October 2023

  • Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/page/header_design_two.php on line 68

বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে করণীয়

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:04:50 pm, Monday, 7 June 2021
  • 14 Time View

সাদিয়া রহমান: বাংলাদেশ একটি দূর্যোগ প্রবণ দেশ। চলতি শতকের ২০ বছরে বিশ্বের যে ১০টি দেশ সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ নবম। এ সময়ে বাংলাদেশের ১১ কোটি ২০ লাখ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছে।

বেলজিয়াম ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন দ্য এপিডেমিওলজি অব ডিজাস্টারস (সিআরইডি)’ এবং জাতিসংঘের ‘ইউএন অফিস ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন (ইউএনডিআরআর)’ এর যৌথ গবেষণায় প্রকাশিত ‘দ্য হিউম্যান কস্ট অব ডিজাস্টার: অ্যান ওভারভিউ অব লাস্ট টোয়েনটি ইয়ারস ২০০০-২০১৯’ -শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা ক্রমাগত উন্নতি লাভ করলেও, টেকসইভাবে তা মোকাবেলার পথ এখনও বহুদূর।

জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুতর ইস্যু বর্তমানে প্রাকৃতিক দূর্যোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। কিন্তু এর থেকে উত্তরণে আমরা এখনও স্থায়ী কিংবা কার্যকরী কোনো পন্থা অবলম্বন করতে পারছি না। অন্যদিকে, জাপান, ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রবণ দেশ গুলো পরিবেশে বাস্তুসংস্থান এর মতো কিছু মৌলিক পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছে। আজকের লেখনীতে তাই দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব এবং আমরা কীভাবে তা কাজে লাগাতে পারি, সে সম্পর্কে লিখতে চলেছি। এক্ষেত্রে প্রথমেই তাই আমাদের জানতে হবে, বাস্তুতন্ত্র, এর গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ সম্পর্কে।

 

যে তন্ত্রের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট পরিবেশে বসবাসকারী জীব সম্প্রদায়ের সঙ্গে ওই পরিবেশের অজৈব উপাদান গুলোর পারস্পরিক উপাদানের আদান-প্রদান ঘটে, তাকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম বলে। বিজ্ঞানী ওডামের মতে, কোন একটি অঞ্চলের সমগ্র জীবকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যে একক গড়ে তোলে, তাই বাস্তুতন্ত্র। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা অপরিহার্য। আমাদের চারপাশে অনেক ধরণের বাস্তুতন্ত্র বিরাজমান।

অন্যদিকে, বাস্তুতন্ত্রে শক্তির মূল উৎস হল সূর্য। সৌরশক্তি প্রাথমিক ভাবে উৎপাদকের দেহে আবদ্ধ থাকে এবং পরে তা বিভিন্ন খাদকের দেহে সঞ্চারিত হয়। পরিবেশে বাস্তুতন্ত্র একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একক। প্রকৃতিতে যে কোনো জীবের সংখ্যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়না। প্রতিটি জীব একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে এরা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। মানুষের বাস্তুতন্ত্র থেকে প্রাপ্ত সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে খাবার, পানি, কাঠ, ফাইবার ইত্যাদি। এছাড়াও মাটির গঠন, সালোকসংশ্লেষণ, পুষ্টির বন্টন পদ্ধতি সহ প্রভৃতি সকল কিছু বাস্তুতন্ত্রের অংশ। পাশাপাশি জলবায়ু, বিভিন্ন রোগ থেকে শুরু করে মহামারী বিস্তার, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস সহ অন্যান্য বিপর্যয়কে প্রভাবিত করে বাস্তুতন্ত্র। তাই বলাই বাহুল্য, বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।

আবার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলতে মূলত ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, সুনামি, বন্যা ইত্যাদি বোঝায়। অর্থাৎ পরিবেশ সৃষ্ট এমন কোনো ঘটনা যা প্রাণ এবং সম্পদের ক্ষতিসাধন করে। এই বিপর্যয়গুলো মূলত, একটি সমাজ কীভাবে তার পরিবেশকে পরিচালিত করে, তার উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দূর্যোগ গুলোর কারণ সাধারণত বন উজার বা অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া; অতিরিক্ত পলি জমা; নিয়মিত নদী বা খাল গুলো ড্রেজিং করে সংস্কার না করা; সমুদ্র ও নদীর পানির নিয়মিত দূষণ সহ প্রভৃতি।

তাছাড়া, গোটা বিশ্বজুড়েই পরিকল্পনাহীন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় বাড়ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে জলবিদ্যুৎ সংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি অপরিকল্পিত বাঁধ এবং ডাইক প্রকল্পগুলো অর্থনৈতিক বিকাশের বদলে প্রাকৃতিক ঝুঁকির মাত্রাই বৃদ্ধি করছে। একই সঙ্গে, উপকূল এবং নদী অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে অদূরদর্শী নগরায়ন।

গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী, পরিবেশে তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধির কারণে অনেক দেশ আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষয়সহ ৫টি বিপর্যয় ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বিলম্ব না করে, পরিবেশ সৃষ্ট যেকোনো বিপর্যয় এড়াতে কিংবা অন্তত ক্ষতির পরিমাণ কমাতে প্রয়োজন বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস।

 

প্রাপ্ত ধারণা থেকে আমরা সহজে বলতে পারি, বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস হচ্ছে এমন এক প্রক্রিয়া, যা বাস্তুসংস্থার টেকসই পরিচালনার মাধ্যমে এর সার্বিক সংরক্ষণ, সুরক্ষা প্রদান এবং দূর্যোগ পরবর্তী পুনর্গঠন নিশ্চিত করে, পাশাপাশি জীবের জীবিকা নির্বাহের ক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে তোলে। এর লক্ষ্য দুর্যোগজনিত আর্থ-সামাজিক দুর্বলতা হ্রাস করা। এছাড়াও পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে এমন সকল ঝুঁকি মোকাবেলায় এটি ভূমিকা রাখে।

 

বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষমতা:

ক. পাহাড়-পর্বত:

  • পাহাড়-পর্বতের চূড়া এবং পাশের গাছপালা গুলোর মূলের ধরন শক্ত প্রকৃতির, যা মাটি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং ভূমিধ্বস রোধ করে পাহাড়ের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
  • প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো পানি সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও পানি পরিশোধন, খরা প্রশমন এবং পানীয় জলের সরবরাহকে রক্ষাও করে।
  • প্রাথমিক বনগুলো বন্যার ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে।

খ. জলাভূমি:

  • জলাভূমি এবং প্লাবনভূমিগুলো উপকূলীয় অঞ্চলে এবং পাহাড়ী অঞ্চলে বন্যার জল নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ভেজা তৃণভূমি এবং অন্যান্য জলাভূমি পানি সংরক্ষণ করে । প্রচুর বৃষ্টিপাত বা বসন্তকালে তুষার গলনের পরে মাটিতে পানি শোষণ করার গতি এবং পরিমাণ হ্রাস করে মাটি দূষণ রোধ করে।
  • উপকূলীয় জলাভূমি, দ্বীপ, নদীর মোহনা এরা ঝড়ের গতি হ্রাস এবং জোয়ারের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে ।

গ. উপকূলীয় অঞ্চল: (ম্যানগ্রোভ, লবণাক্ত হ্রদ, প্রবালদ্বীপ, দ্বীপপুঞ্জ):

  • উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র ঘূর্ণিঝড়, ছোটখাটো ঝড়, বন্যা, সমুদ্র ঝড় এবং অন্যান্য উপকূলীয় বিপদ থেকে সুরক্ষা দেয় (সম্মিলিতভাবে)।
  • উপকূলীয় অঞ্চলের গাছগুলো (ম্যানগ্রোভ বন) সাধারণত বালি এবং সমুদ্রের নোনা পানিতেই বেড়ে উঠে ও বংশবিস্তার করে। এরা যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজনে সক্ষম হয়।
  • ম্যানগ্রোভ বনের গাছগুলো সাধারণত ঝড়ের কারণে হওয়া তীব্র ক্ষয় হ্রাস করে এবং জোয়ারের সময় ঢেউ এর উচ্চতা কমাতে সাহায্য করে ।
  • উপকূলীয় অঞ্চলের জলাভূমিগুলো (পুকুর) নোনতা জলের অনুপ্রবেশ আটকায়।
  • বালির টিলা এবং ছোট দ্বীপপুঞ্জ গুলো উচ্চ স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ঘূর্নিঝড়, সুনামী এবং অন্যান্য ঝড়ের ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম হয়।

ঘ. সাধারণ ভূমি:

  • সাধারণ ভূমিতে প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ব্যবস্থাপনা দূর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ঘাস, গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ মাটি সংরক্ষণ করে এবং মাটিতে আর্দ্রতা বজায় রাখায় খরা সমস্যাও নিয়ন্ত্রিত হয় ।
  • বাড়ির চারদিকে গাছ লাগিয়ে (জীবন্ত বেড়া) দেয়া হয়। এরা ঝড়ের বিরুদ্ধে বাধা হিসাবে কাজ করে।
  • কৃষি অনুশীলন এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ ফসলের গাছপালা রোপণ করে খরা অবস্থাকে স্বাভাবিক করা যায়।

 

ইকোসিস্টেম / বাস্তুতন্ত্র -দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কেন এবং কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ: ইকোসিস্টেম গুলো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করতে অবদান রাখে। যথা:

প্রথমত, জলাভূমি, বন এবং উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র গুলোর সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করা যায়, কারণ বাস্তুতন্ত্রের প্রতিরক্ষামূলক ক্ষমতা রয়েছে। সু-পরিচালিত বাস্তুতন্ত্র যেকোনো বিপদের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সুরক্ষা দিতে পারে, যেমন ভূমিধ্বস, বন্যা, তুষারপাত, ঝড়, দাবানল, খরা ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ:

  • ইন্দোনেশিয়াতে ‘বিল্ডিং উইথ নেচার’ নামে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থিতিশীল উপকূলরেখা তৈরি করা হয়েছে, ফলস্বরূপ উপকূলীয় বন্যা এবং ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে প্রায় ৭০ হাজার দুর্বল মানুষকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হয়েছে।
  • সুইজারল্যান্ডে বন সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বন নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে এবং দেশকে দূর্যোগ ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার নিমিত্তে বন পরিচালনার জন্য আর্থিক সাহায্যও প্রদান করা হয়।
  • ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে জলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হয়েছে, যা বন্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যাতে জলাভূমি এবং নদী নালাতে জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।

দ্বিতীয়ত, ইকোসিস্টেমগুলো দূর্যোগের সামাজিক-অর্থনৈতিক দুর্বলতার প্রভাবকে হ্রাস করে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রাথমিকভাবে বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষা এবং বিপদ নিয়ন্ত্রণকারী কার্যক্রমে মনোনিবেশ করা সহজ। বাস্তুসংস্থান গুলো মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখে এবং খাদ্য ও ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে। এছাড়াও ঔষধ তৈরির কাঁচামাল এবং নির্মাণ সামগ্রী প্রদান করে, যা কোনো দূর্যোগের বিরুদ্ধে জীব সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দেয়। উদাহরণস্বরূপ:

  • চীনে জলাভূমিগুলো বন্যা প্রতিরোধের জন্য পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে, যেনো অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি বিপর্যয় ঝুঁকি এবং বিপর্যয় প্রভাব উভয়ই হ্রাস করতে পারে।
  • মেক্সিকোতে বিশ্বব্যাংক একটি বিশাল আকারের উপকূলীয় জলাভূমি এবং ম্যানগ্রোভ জলাভূমি গ্রহণ করছে যেনো তারা উপকূলীয় সুরক্ষা প্রদান করে স্বাস্থ্যকর জল সরবরাহ এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারে।

পরিশেষে, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দূর্যোগপ্রবণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এখানে প্রাকৃতিক দূর্যোগের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। তাই, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখন থেকেই বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

 

লেখক: শিক্ষার্থী, ৩য় বর্ষ, এগ্রিকালচার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, sadiarahaman79@gmail.com.

Tag :

Notice: Trying to access array offset on value of type int in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/template-parts/common/single_two.php on line 177

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

Notice: Undefined index: footer_custom_code in /home/nabajugc/public_html/wp-content/themes/NewsFlash-Pro/footer.php on line 87

বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে করণীয়

Update Time : 05:04:50 pm, Monday, 7 June 2021

সাদিয়া রহমান: বাংলাদেশ একটি দূর্যোগ প্রবণ দেশ। চলতি শতকের ২০ বছরে বিশ্বের যে ১০টি দেশ সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ নবম। এ সময়ে বাংলাদেশের ১১ কোটি ২০ লাখ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছে।

বেলজিয়াম ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন দ্য এপিডেমিওলজি অব ডিজাস্টারস (সিআরইডি)’ এবং জাতিসংঘের ‘ইউএন অফিস ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন (ইউএনডিআরআর)’ এর যৌথ গবেষণায় প্রকাশিত ‘দ্য হিউম্যান কস্ট অব ডিজাস্টার: অ্যান ওভারভিউ অব লাস্ট টোয়েনটি ইয়ারস ২০০০-২০১৯’ -শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা ক্রমাগত উন্নতি লাভ করলেও, টেকসইভাবে তা মোকাবেলার পথ এখনও বহুদূর।

জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুতর ইস্যু বর্তমানে প্রাকৃতিক দূর্যোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। কিন্তু এর থেকে উত্তরণে আমরা এখনও স্থায়ী কিংবা কার্যকরী কোনো পন্থা অবলম্বন করতে পারছি না। অন্যদিকে, জাপান, ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রবণ দেশ গুলো পরিবেশে বাস্তুসংস্থান এর মতো কিছু মৌলিক পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রাকৃতিক দূর্যোগ হ্রাসে অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছে। আজকের লেখনীতে তাই দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব এবং আমরা কীভাবে তা কাজে লাগাতে পারি, সে সম্পর্কে লিখতে চলেছি। এক্ষেত্রে প্রথমেই তাই আমাদের জানতে হবে, বাস্তুতন্ত্র, এর গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ সম্পর্কে।

 

যে তন্ত্রের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট পরিবেশে বসবাসকারী জীব সম্প্রদায়ের সঙ্গে ওই পরিবেশের অজৈব উপাদান গুলোর পারস্পরিক উপাদানের আদান-প্রদান ঘটে, তাকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম বলে। বিজ্ঞানী ওডামের মতে, কোন একটি অঞ্চলের সমগ্র জীবকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে যে একক গড়ে তোলে, তাই বাস্তুতন্ত্র। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রের ভূমিকা অপরিহার্য। আমাদের চারপাশে অনেক ধরণের বাস্তুতন্ত্র বিরাজমান।

অন্যদিকে, বাস্তুতন্ত্রে শক্তির মূল উৎস হল সূর্য। সৌরশক্তি প্রাথমিক ভাবে উৎপাদকের দেহে আবদ্ধ থাকে এবং পরে তা বিভিন্ন খাদকের দেহে সঞ্চারিত হয়। পরিবেশে বাস্তুতন্ত্র একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ একক। প্রকৃতিতে যে কোনো জীবের সংখ্যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়না। প্রতিটি জীব একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে এরা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। মানুষের বাস্তুতন্ত্র থেকে প্রাপ্ত সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে খাবার, পানি, কাঠ, ফাইবার ইত্যাদি। এছাড়াও মাটির গঠন, সালোকসংশ্লেষণ, পুষ্টির বন্টন পদ্ধতি সহ প্রভৃতি সকল কিছু বাস্তুতন্ত্রের অংশ। পাশাপাশি জলবায়ু, বিভিন্ন রোগ থেকে শুরু করে মহামারী বিস্তার, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস সহ অন্যান্য বিপর্যয়কে প্রভাবিত করে বাস্তুতন্ত্র। তাই বলাই বাহুল্য, বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।

আবার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলতে মূলত ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, সুনামি, বন্যা ইত্যাদি বোঝায়। অর্থাৎ পরিবেশ সৃষ্ট এমন কোনো ঘটনা যা প্রাণ এবং সম্পদের ক্ষতিসাধন করে। এই বিপর্যয়গুলো মূলত, একটি সমাজ কীভাবে তার পরিবেশকে পরিচালিত করে, তার উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দূর্যোগ গুলোর কারণ সাধারণত বন উজার বা অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া; অতিরিক্ত পলি জমা; নিয়মিত নদী বা খাল গুলো ড্রেজিং করে সংস্কার না করা; সমুদ্র ও নদীর পানির নিয়মিত দূষণ সহ প্রভৃতি।

তাছাড়া, গোটা বিশ্বজুড়েই পরিকল্পনাহীন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় বাড়ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে জলবিদ্যুৎ সংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি অপরিকল্পিত বাঁধ এবং ডাইক প্রকল্পগুলো অর্থনৈতিক বিকাশের বদলে প্রাকৃতিক ঝুঁকির মাত্রাই বৃদ্ধি করছে। একই সঙ্গে, উপকূল এবং নদী অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে অদূরদর্শী নগরায়ন।

গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী, পরিবেশে তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধির কারণে অনেক দেশ আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষয়সহ ৫টি বিপর্যয় ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বিলম্ব না করে, পরিবেশ সৃষ্ট যেকোনো বিপর্যয় এড়াতে কিংবা অন্তত ক্ষতির পরিমাণ কমাতে প্রয়োজন বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস।

 

প্রাপ্ত ধারণা থেকে আমরা সহজে বলতে পারি, বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস হচ্ছে এমন এক প্রক্রিয়া, যা বাস্তুসংস্থার টেকসই পরিচালনার মাধ্যমে এর সার্বিক সংরক্ষণ, সুরক্ষা প্রদান এবং দূর্যোগ পরবর্তী পুনর্গঠন নিশ্চিত করে, পাশাপাশি জীবের জীবিকা নির্বাহের ক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে তোলে। এর লক্ষ্য দুর্যোগজনিত আর্থ-সামাজিক দুর্বলতা হ্রাস করা। এছাড়াও পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে এমন সকল ঝুঁকি মোকাবেলায় এটি ভূমিকা রাখে।

 

বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষমতা:

ক. পাহাড়-পর্বত:

  • পাহাড়-পর্বতের চূড়া এবং পাশের গাছপালা গুলোর মূলের ধরন শক্ত প্রকৃতির, যা মাটি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং ভূমিধ্বস রোধ করে পাহাড়ের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
  • প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো পানি সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও পানি পরিশোধন, খরা প্রশমন এবং পানীয় জলের সরবরাহকে রক্ষাও করে।
  • প্রাথমিক বনগুলো বন্যার ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে।

খ. জলাভূমি:

  • জলাভূমি এবং প্লাবনভূমিগুলো উপকূলীয় অঞ্চলে এবং পাহাড়ী অঞ্চলে বন্যার জল নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ভেজা তৃণভূমি এবং অন্যান্য জলাভূমি পানি সংরক্ষণ করে । প্রচুর বৃষ্টিপাত বা বসন্তকালে তুষার গলনের পরে মাটিতে পানি শোষণ করার গতি এবং পরিমাণ হ্রাস করে মাটি দূষণ রোধ করে।
  • উপকূলীয় জলাভূমি, দ্বীপ, নদীর মোহনা এরা ঝড়ের গতি হ্রাস এবং জোয়ারের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে ।

গ. উপকূলীয় অঞ্চল: (ম্যানগ্রোভ, লবণাক্ত হ্রদ, প্রবালদ্বীপ, দ্বীপপুঞ্জ):

  • উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র ঘূর্ণিঝড়, ছোটখাটো ঝড়, বন্যা, সমুদ্র ঝড় এবং অন্যান্য উপকূলীয় বিপদ থেকে সুরক্ষা দেয় (সম্মিলিতভাবে)।
  • উপকূলীয় অঞ্চলের গাছগুলো (ম্যানগ্রোভ বন) সাধারণত বালি এবং সমুদ্রের নোনা পানিতেই বেড়ে উঠে ও বংশবিস্তার করে। এরা যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজনে সক্ষম হয়।
  • ম্যানগ্রোভ বনের গাছগুলো সাধারণত ঝড়ের কারণে হওয়া তীব্র ক্ষয় হ্রাস করে এবং জোয়ারের সময় ঢেউ এর উচ্চতা কমাতে সাহায্য করে ।
  • উপকূলীয় অঞ্চলের জলাভূমিগুলো (পুকুর) নোনতা জলের অনুপ্রবেশ আটকায়।
  • বালির টিলা এবং ছোট দ্বীপপুঞ্জ গুলো উচ্চ স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ঘূর্নিঝড়, সুনামী এবং অন্যান্য ঝড়ের ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম হয়।

ঘ. সাধারণ ভূমি:

  • সাধারণ ভূমিতে প্রাকৃতিক উদ্ভিদ ব্যবস্থাপনা দূর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ঘাস, গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ মাটি সংরক্ষণ করে এবং মাটিতে আর্দ্রতা বজায় রাখায় খরা সমস্যাও নিয়ন্ত্রিত হয় ।
  • বাড়ির চারদিকে গাছ লাগিয়ে (জীবন্ত বেড়া) দেয়া হয়। এরা ঝড়ের বিরুদ্ধে বাধা হিসাবে কাজ করে।
  • কৃষি অনুশীলন এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ ফসলের গাছপালা রোপণ করে খরা অবস্থাকে স্বাভাবিক করা যায়।

 

ইকোসিস্টেম / বাস্তুতন্ত্র -দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কেন এবং কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ: ইকোসিস্টেম গুলো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করতে অবদান রাখে। যথা:

প্রথমত, জলাভূমি, বন এবং উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র গুলোর সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করা যায়, কারণ বাস্তুতন্ত্রের প্রতিরক্ষামূলক ক্ষমতা রয়েছে। সু-পরিচালিত বাস্তুতন্ত্র যেকোনো বিপদের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সুরক্ষা দিতে পারে, যেমন ভূমিধ্বস, বন্যা, তুষারপাত, ঝড়, দাবানল, খরা ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ:

  • ইন্দোনেশিয়াতে ‘বিল্ডিং উইথ নেচার’ নামে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থিতিশীল উপকূলরেখা তৈরি করা হয়েছে, ফলস্বরূপ উপকূলীয় বন্যা এবং ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে প্রায় ৭০ হাজার দুর্বল মানুষকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হয়েছে।
  • সুইজারল্যান্ডে বন সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বন নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে এবং দেশকে দূর্যোগ ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার নিমিত্তে বন পরিচালনার জন্য আর্থিক সাহায্যও প্রদান করা হয়।
  • ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে জলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হয়েছে, যা বন্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যাতে জলাভূমি এবং নদী নালাতে জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।

দ্বিতীয়ত, ইকোসিস্টেমগুলো দূর্যোগের সামাজিক-অর্থনৈতিক দুর্বলতার প্রভাবকে হ্রাস করে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রাথমিকভাবে বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষা এবং বিপদ নিয়ন্ত্রণকারী কার্যক্রমে মনোনিবেশ করা সহজ। বাস্তুসংস্থান গুলো মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখে এবং খাদ্য ও ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে। এছাড়াও ঔষধ তৈরির কাঁচামাল এবং নির্মাণ সামগ্রী প্রদান করে, যা কোনো দূর্যোগের বিরুদ্ধে জীব সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দেয়। উদাহরণস্বরূপ:

  • চীনে জলাভূমিগুলো বন্যা প্রতিরোধের জন্য পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে, যেনো অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি বিপর্যয় ঝুঁকি এবং বিপর্যয় প্রভাব উভয়ই হ্রাস করতে পারে।
  • মেক্সিকোতে বিশ্বব্যাংক একটি বিশাল আকারের উপকূলীয় জলাভূমি এবং ম্যানগ্রোভ জলাভূমি গ্রহণ করছে যেনো তারা উপকূলীয় সুরক্ষা প্রদান করে স্বাস্থ্যকর জল সরবরাহ এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারে।

পরিশেষে, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দূর্যোগপ্রবণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এখানে প্রাকৃতিক দূর্যোগের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। তাই, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখন থেকেই বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

 

লেখক: শিক্ষার্থী, ৩য় বর্ষ, এগ্রিকালচার, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, sadiarahaman79@gmail.com.